শিক্ষার্থীদের অসন্তোষকে তোয়াক্কা না করে ফের রাবি ক্যাফেটেরিয়ায় বাড়ছে খাবারের দাম

শিক্ষার্থীদের অসন্তোষকে তোয়াক্কা না করে ফের রাবি ক্যাফেটেরিয়ায় বাড়ছে খাবারের দাম

শিক্ষার্থীদের অসন্তোষকে তোয়াক্কা না করে ফের রাবি ক্যাফেটেরিয়ায় বাড়ছে খাবারের দাম
শিক্ষার্থীদের অসন্তোষকে তোয়াক্কা না করে ফের রাবি ক্যাফেটেরিয়ায় বাড়ছে খাবারের দাম

আল্-মারুফ, রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের দাম আবারও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ার অজুহাতে সাধারণ মিলে ২ টাকা ও অন্য মিলে ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। নতুন দাম রোববার (২০ নভেম্বর) থেকে কার্যকর হবে। তবে খাবারের মান না বাড়িয়ে কয়েক দফা দাম বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

দ্রব্যমূল্য বাড়ায় গত ১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়াসহ ১৭টি হলে প্রতি বেলায় খাবারের পূর্ব মূল্য থেকে ৪ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। ফলে দুপুরের খাবার ২৪ টাকা থেকে ২৮ টাকা ও রাতের খাবার ১৮ টাকা থেকে ২২ টাকা করা হয়েছিল। দামের সঙ্গে খাবারের মানও বাড়ানো হবে বলা জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দাম বাড়লেও খাবারের মান অপরিবর্তিত। পরিমাণটা সামান্য বেশি দিলেও আগের তুলনায় মান বাড়েনি।

শিক্ষার্থীরা আরও বলছেন, খাবারের গুণগত মান ভালো না হওয়ায় ঠিকমতো খেতে পারেন না তারা। এমনকি প্রতিদিন একই রকম তরকারি দিয়ে চলে খাবার পরিবেশন। মাছ বা মাংসের উপস্থিতি থাকলেও তা নামমাত্র। এসব খাবারের মান উন্নত করার পরিমাণ একেবারেই নগণ্য। খাবারের গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য বিভিন্নভাবে দাবি জানিয়ে আসলেও নজর দিচ্ছে না প্রশাসন।

দাম বাড়ানো অযৌক্তিক দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বকুল ইসলাম বলেন, ‘ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এটা কি শিক্ষার্থীবান্ধব না কি শিক্ষার্থী স্বার্থ? যখন তখন অজুহাত দেখিয়ে খাবারের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এইতো কিছুদিন আগেও মিল প্রতি ৪ টাকা বাড়িয়েছে। এখন আবারো বাড়াচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের উচিত ছিল খাবারের মানের দিকে জোর দেওয়া। খাবারের মান এতই খারাপ যে জেলখানার কয়েদিরাও এর চাইতে ভালো খাবার পায়। আমাদের টাকায় আমাদের খাবারের ব্যবস্থা হলেও সঠিক তত্ত্বাবধানের অভাবে পুষ্টিহীন খাবার খাচ্ছি।’

রাবি শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সুযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করবে। কিন্তু সেটা কি হচ্ছে? কিছুদিন আগেও ক্যাফেটেরিয়াসহ হলগুলোতে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু মানের কি আদৌ পরিবর্তন হয়েছে? খাবারের মান না বাড়িয়ে ঘন ঘন দাম বাড়ানোটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং শিক্ষার্থী পরিপন্থি। অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা সকালের খাবার মাইনাস করে চললেও খাবারের দামের সঙ্গে দৌড়ে পারছে না। তাই বলতে চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ভর্তুকি দিয়ে খাবারের দাম ও মান ঠিক রাখা হোক।’

নতুন করে খাবারের দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার প্রশাসক ড. এ কে এম আরিফুল ইসলাম বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পূর্বের দাম অনুযায়ী আমরা দীর্ঘদিন যাবত লোকসানে আছি। বিশেষ করে সাধারণ মিলে আমাদের বেশি লোকসান হয়। দৈনন্দিন প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী সাধারণ মিল খেয়ে থাকে। এভাবে লোকসান নিয়ে চলা আমাদের জন্য কষ্টকর। দাম বাড়ানো ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। সবকিছুর দাম বেড়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা করে সাধারণ মিলে ২ টাকা বাড়িয়ে ৩০টাকা ও অন্য মিলে ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, নতুন করে দাম বাড়ানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষ আমাকে জানায়নি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। দাম বাড়াতে চাইলে একটা সিদ্ধান্তের মাধ্যমে করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেন নতুন করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করবো। এরপর একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হবো।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply